লেখাপড়া করে যে, গাড়ি-ঘোড়া চড়ে সে’৷ চীনে মেয়েরা লেখাপড়ায় ভালো হলে, ভালো চাকরি করলে গাড়ি তো চড়েই আরো অনেক সুখই পায়৷ পায় না শুধু বর৷ অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, চীনে নিজের যোগ্যতায় খুব সফল মেয়েদের বিয়ে হচ্ছে না৷ বয়স ৩৫ বছরে
র বেশি হলে মেয়ের আর বিয়ে হবে না – চীনে এটা মোটামুটি ধরেই নেয়া যায়৷ অথচ লেখাপড়া শেষ করে ভালো একটা অবস্থান তৈরি করতে গেলে বয়স ৩৫ তো হতেই পারে! কিন্তু চীনের পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা এবং এক সন্তান নীতির কারণে এক দিকে যেমন মেয়ের সংখ্যা কমের দিকে, তেমনি বিয়ের ব্যাপারে পুরুষের বায়নাক্কাও বেড়েই চলেছে৷ পুরুষ শাসিত সমাজে পুরুষ সাধারণত নিজেকে নারীর চেয়ে উন্নততর, অপেক্ষাকৃত ক্ষমতাবানের জায়গায় দেখতে চায়৷ পুরুষদের এমন চিন্তাই কাল সমস্যায় ফেলছে চীনের পঁয়ত্রিশোর্ধ শিক্ষিত মেয়েদের৷ মেয়েদের দুশ্চিন্তা শুরু হয় আরো আগে থেকে৷ কার্টুনিস্ট লিও লি ডয়চে ভেলেকে জানালেন, মেয়েদের বয়স ২৬ থেকে ২৭ হলেই বিয়ের জন্য তাঁদের ওপর চাপ বাড়তে থাকে, কারণ, ওই বয়সের মেয়েদের ‘লেফটওভার ফাইটার্স’ বা ‘পরিত্যক্ত হওয়া এড়াতে সংগ্রামরত’ ভাবেন পুরুষরা৷ বয়স যাঁদের ৩২ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে, চীনা পুরুষদের বিবেচনায় তাঁরা ‘পিৎসা হাট কর্মী’, বা ‘কুড়েঘর বাসিনী’, যাঁরা নিজের কাজে ব্যস্ত থাকায় স্বামী-সংসার নিয়ে ভাবার সময়ই পান না৷ তাঁদের বিয়ে হওয়াটা আরো কঠিন৷ আর বয়স ৩৫ বছরের বেশি হলে মেয়ে যত যোগ্য, যত সুন্দরীই হোক, চীনের বিয়ের বাজারে তাঁরা ‘বয়স ৩৫ বছরের বেশি হলে মেয়ে যত যোগ্য, যত সুন্দরীই হোক, চীনের বিয়ের বাজারে তাঁরা অপাঙক্তেয়’ হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক স্যান্ডি টো বিষয়টি নিয়ে চীনের অনেক অবিবাহিত মেয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন৷ কথা বলে তিনি নিশ্চিত যে, চীনের পুরুষরা তাঁদের চেয়ে যোগ্য মেয়েদের বিয়ে করতে অনিচ্ছুক, কারণ, যোগ্যতর মেয়েদের তাঁরা ভয় পায়, মনে করে যোগ্যতার এই তারতম্য ভবিষ্যৎ জীবনে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে৷ এমন মানসিকতা দেশের সবচেয়ে ‘যোগ্য’ নারী এবং সবচেয়ে ‘অযোগ্য’ পুরুষদের বিয়ের বাজার থেকে ছিটকে ফেলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি৷ তাঁর কথায়, ‘‘অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, এখন ‘এ’ গ্রেডের পুরুষরা বিয়ে করে ‘বি’ গ্রেডের মেয়েদের, ‘বি’ গ্রেডের পুরুষ খুঁজে নেয় ‘সি’ গ্রেডের মেয়েকে আর ‘সি’ গ্রেডের ছেলেরা বেছে নেয় ‘ডি’ গ্রেডের মেয়েকে৷ তার মানে, ‘এ’ গ্রেডের মেয়ে আর ‘ডি’ গ্রেডের ছেলেরা সঙ্গীই খুঁজে পায় না৷” এ পরিস্থিতির পরিবর্তন কিভাবে সম্ভব? স্যান্ডি টো মনে করেন চীনের মেয়েরা যদি উন্নতির এ ধারা বজায় রাখে তাহলেই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের এ দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাবে, ‘‘মেয়েরা যত বেশি লেখাপড়া করবে ‘পরিত্যক্তা নারী’-র ধারণা সমাজ ততই হয়ত বর্জন করতে বাধ্য হবে৷ পুরুষদের জন্য তখন তাঁদের চেয়ে অযোগ্য মেয়ে খুঁজে পাওয়া আরো কঠিন হয়ে যাবে৷’ ‘খবর DW DE এর
0 comments:
Post a Comment