গর্ভবতী মায়ের পরিচর্যা
গর্ভের শিশুর শারীরিক ও মানসিক পরিপূর্ণ বিকাশের পূর্বশর্ত হচ্ছে মায়ের সুস্থতা সুনিশ্চিতকরণ। এ জন্য একজন নারীকে নিজেই যেমন হতে হয় স্বাস্থ্য সম্পর্কেসচেতন, তেমিন গর্ভবতী মায়েদের প্রতি যত্নশীল হতে হয় পরিবারের সবার। মাকে গর্ভকাল থেকেই থাকতে হবে হাসিখুশি ও দুশ্চিন্তামুক্ত। গর্ভবতী মাকে নিয়মিত ঘুম ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। সর্বোপরি সুস্থ শিশু লাভের জন্য গর্ভবতী মায়ের পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ ও স্বাস্থ্য পরিচর্যা প্রয়োজন।গর্ভবতী মায়ের পরিচর্যা ‘গর্ভস্থ সন্তান ও মা’ উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।
গর্ভাবস্থায় কিছু স্বাভাবিক সমস্যা যেমন অরুচি ও বমি বমি ভাব হতেই পারে। তাই যা খেতে ভালোলাগে তাই খাবেন। তবে খুব বেশি ডাল, দুধ ইত্যাদ না খাওয়াই ভালো। এ সময় বুকজ্বালা ও বদহজম একটা স্বাভাবিক লক্ষন তাই হালকা সহজপাচ্য অথচ পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। তাছাড়া প্রচুর পরিমাণে পানীয় ও টাটকা ফল, বেল, কলা, পেয়ারা, দুধ-ভাত-কলা বা দুধ-আটার রুটি ইসুবগুলের ভূষি খাওয়া যায় এতে কোষ্ঠকাঠিন্য রোধহয়। এ সময় কোমর ব্যথার জন্য শাক, ছোট মাছ, দুধ, ডিম, মাখন অর্থাৎ ভিটামিন ডি ওক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এবং বুক ধড়ফড়, শ্বাসকষ্ট, চুলকানি, মাড়িস্ফীতি ও রক্তক্ষরণ, পাইলস ও পায়ের শিরাস্ফীতি হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।এসময় উদ্ভিজ্য চর্বির চাহিদাপূরণে ভোজ্যতৈল, সয়াবিন, সরিষা বাদাম ইত্যাদি আমিষ জাতীয় খাবার এবং দুধ, পনির, কম চর্বিযুক্ত ইয়োগট, এককাপ ক্যালসিয়ামযুক্ত অরেঞ্জজুস বা সয়দুধ খেয়ে ক্যালসিয়ামের চাহিদা মেটাতে পারেন। আয়রন ও ফলিক এসিড কাঁচাকলা, কচুশাক, অন্যান্য ঘন সবুজ ও লালশাক, মাছ, মাংস ও ডিমে রয়েছে। ভিটামিনের জন্য প্রচুর শাকসবজি, টক, মিষ্টিফল, জুস খেতেহবে। পানি গর্ভস্থশিশুর, পুষ্টির সরবরাহ সঠিক রাখতে এবং শরীর থেকে বর্জ্যপদার্থসমূহ নিষ্কাষণে সহায়ক। তাই গর্ভবতীকে প্রতিদিন ১৫-২০গ্লাস পানি পান করতে হবে। শর্করা অধিক খেলে শরীরের ওজন বেড়ে যায় তাই আঁশযুক্ত শর্করা যেমন ঢেঁকিছাঁটা চালের ভাত, গমের রুটি ইত্যাদি খাওয়া উচিত। মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য প্রাকৃতিকনির্মল পরিবেশে হাঁটা, চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থাকরা, অনৈতিক কোনো ভাবনা মনের মধ্যে না আনা, এছাড়াও ধূমপায়ীদের থেকে দূরে থাকা, ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত কারো সংস্পর্শে আসা উচিত নয়।
0 comments:
Post a Comment